Monday, December 23, 2024
Homeউত্তরবঙ্গদেড় মাসের বেশি সময় ধরে বন্যার জলে বন্দী গ্রামের বাসিন্দারা

দেড় মাসের বেশি সময় ধরে বন্যার জলে বন্দী গ্রামের বাসিন্দারা

মালদার ভুতনির তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েতের বিস্তীর্ণ এলাকা গঙ্গার জলে প্লাবিত হয়ে রয়েছে। তবে হীরানন্দপুর গ্রামে এখনো পর্যন্ত পর্যাপ্ত পরিমাণে ত্রাণ না দেওয়ার অভিযোগ তুললেন বাসিন্দারা। গ্রামের বাসিন্দাদের অভিযোগ দেড় মাসের বেশি সময় ধরে বন্যার জলে সমস্যায় রয়েছেন তারা। কিন্তু মাত্র একবার তাদের কাছে ত্রাণ পৌঁছেছে। গ্রামের বাসিন্দারা একটি করে ত্রিপল পেয়েছে। তারপর প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন খোঁজ খবর নেওয়া হয়নি। ত্রাণ না পেয়ে প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন গ্রামের বাসিন্দারা। হিরানন্দপুর গ্রামে প্রায় সাড়ে আট পরিবারের বসবাস। কিন্তু এখনও পর্যন্ত তাদের কাছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ত্রাণ পৌঁছে দেওয়া হয়নি। চরম সমস্যার মধ্যে রয়েছে গ্রামের বাসিন্দারা। বাড়িঘর জল ঢুকেছে বাড়ির আসবাবপত্র থেকে গরু ছাগল নিয়ে উঁচু বাঁধে এসে ত্রিপাল টাঙিয়ে বসবাস করছে। মানিকচক ব্লকের ভুতনি হীরানন্দপুর গ্রাম পঞ্চায়েত বিজেপি পরিচালিত। পঞ্চায়েতের প্রধান অনিমা মন্ডলের স্বামী সংকর চন্দ্র মন্ডল জানান গ্রামের বাসিন্দারা যে পিপাল পাইনি যে অভিযুক্ত করছে সেটা সম্পূর্ণ ঠিক পরিবারে এই মাত্র ত্রিপাল পেয়েছে। ৭০ থেকে ৯০% লোক শুকনো খাবার পায়নি ভুতনি এলাকায় তিনটি অঞ্চল উত্তর চন্ডিপুর দক্ষিণ চন্ডিপুর হীরানন্দপুর, ব্লক প্রশাসন যতটুকু চাল ডাল দিচ্ছে সেই চাল ডাল দিয়ে আমরা পঞ্চায়েতে দপ্তরে খিচুড়ি করে খাওয়াচ্ছি। বিজেপি প্রদানের স্বামী সংকর চন্দ্র মন্ডল জানান রাজনৈতিক শিকার হয়েছে আমরা। যেহেতু এখানে জেলা পরিষদ থেকে পঞ্চায়েত থেকে বিধায়ক তৃণমূলের সেই ক্ষেত্রে বিজেপি পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েতকে সেই ভাবে ত্রাণ দেওয়া হচ্ছে না। যেখানে তৃণমূলের প্রার্থীরা হেরে গিয়েছে সেই জায়গাতেও বেশি পরিমাণে ত্রাণ দেওয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ। আমরা এই বিষয়ে প্রশাসনের বৈধভাবে জেলা শাসক কে জানিয়েছি। প্রাণ না দিয়ে তৃণমূলের নেতারা। রাজনৈতিক কারণে হিরানন্দপুরের গ্রামবাসী আজকে বঞ্চিত। আমরা চাচ্ছি দলমত নির্বিশেষে সকলে যাতে ত্রাণ পায় ত্রিপাল পাই খাবার পাই। এদিকে গ্রামবাসীদের সমস্ত অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন মানিকচকের বিধায়ক সাবিত্রী মিত্র। তিনি বলেন এখন এলাকায় প্রাকৃতিক বিপর্যয় নেমে এসেছে। এই সময় রাজনীতি করার নয়। দলবল নির্বিশেষে সকলকেই এগিয়ে এসে সমস্ত দুর্গত মানুষদের পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দেওয়া হচ্ছে। এমনকি বন্যা কবলিত এলাকার সমস্ত মানুষজনদের ত্রাণসহ সমস্ত রকম সহযোগিতা প্রশাসনের পক্ষ থেকে করা হচ্ছে বলে তিনি দাবি করেন। জল ক্রমশ বাড়ছে। মানিকচকের শুধু ভূতনি নয় মানিকচকের দশটা বুথ আজকের জলমগ্ন। সরকার সব সময় মানুষের পাশে রয়েছে। পঞ্চায়েতের মাধ্যমে প্রাণ বিলি করা হছে। ভূতকে তৃণমূল করছে কে বিজেপি করছে কে সিপিএম করছে। সেটা এখন বড় কথা নয় ভূতনির মানুষকে রক্ষা করতে হবে তাদের পাশে থাকতে হবে সেটাই এখন একমাত্র লক্ষ্য। বুথে বুথে খাবার পৌঁছে দিচ্ছি আমরা তবে সেই জায়গাতেই খাওয়ার নিয়ে যদি কেউ রাজনীতি করে তাহলে পুলিশ এই বিষয়ে পদক্ষেপ নিবে। প্রাণ প্রশাসনের পক্ষ থেকে হেল্পলাইন খোলা হয়েছে যদি কেউ ত্রাণ না পেয়ে থাকে তাহলে হেল্পলাইন ফোন নম্বরে জানান ত্রাণ পৌঁছে যাবে।এই বিষয়ে মালদা জেলা শাসক নীতিন সিংহানিয়া জানান ব্লক প্রশাসন ,জেলা প্রশাসন এর সমস্ত দপ্তরের আধিকারিক বন্যা পরিস্থিতির বিষয়ে সবসময় নজর রাখছে পর্যাপ্ত পরিমাণে ত্রাণ রয়েছে। যাদের বাড়িঘর জলে ডুবে গিয়েছে সেই সমস্ত এলাকার বাসিন্দাদের সেখান থেকে সরিয়ে নিরাপদ আশ্রয় অর্থাৎ ত্রাণ শিবির করে রাখা হচ্ছে তার জন্য এলাকাই ত্রাণ বন্টনের ক্ষেত্রে কোন সমস্যা নেই। ইতিমধ্যে মানিকচক ব্লকে 15 টি ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে যেখানে দশ হাজার মানুষকে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছে । তাদের খাওয়ানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। বন্যা কবলিত এলাকায় ২৪ টি মেডিকেল ক্যাম্প করা হয়েছে, এখনো পর্যন্ত চল্লিশ হাজার ত্রিপাল বিলি করা হয়েছে। আরো ত্রাণ দাওয়া হবে। কেউ যদি ত্রাণ না পায় তাহলে হেল্পলাইনে ফোন করলে প্রশাসনের কর্মীরা প্রাণ পৌঁছে দিবে।

RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments